কোনোকিছুতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলোতে থামছে না অস্থিরতা। পান থেকে চুন খসার মতো হঠাৎ করেই দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একের পর এক অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। এক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংঘর্ষ না থামতেই আরেকটিতে শুরু হয়। সংকট নিরসনে সামগ্রিকভাবে পরিকল্পনা করে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারছে না সংশ্লিষ্টরা। তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্থবির হয়ে পড়ছে ক্যাম্পাসগুলো। নানা দাবিতে মাঠে অবস্থান করছে শিক্ষার্থীরা। গত কয়েকদিন ধরে তিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পরিস্থিতি এমন যে, কেবল কোনো ঘটনা ঘটলে তার পরিপ্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিকভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। তাতে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং সংঘর্ষ পরবর্তী সংকট আরও বিস্তৃত হচ্ছে। গণঅধিকার পরিষদ এবং দলটির সভাপতি নুরুল হক নুরের ওপর হামলার পরপরই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যায়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীদের সাথে স্থানীয় ও বহিরাগতদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে, চবির ঘটনা দেশে নজিরবিহীন। এ ছাড়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ছাত্র সংসদ নির্বাচন ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলোর দুটি ইতোমধ্যে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, অন্যটিতে অস্তিরতা বিরাজ করছে। ফলে দেশের তিন বিশ্ববিদ্যালয়েই একধরনের সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
এর আগে গত বছরে জুলাই-আগস্টে টানা ৩৬ দিনের আন্দোলনে সূচনীয় পতন ঘটে টানা সাড়ে ১৫ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা দল আওয়ামী লীগের। এরপর দেশের দায়িত্ব নেয় নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীণ অন্তর্বর্তী সরকার।তবে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত ১৩ মাসেও শান্ত হয়নি দেশের শিক্ষাঙ্গন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হঠাৎ করেই আবারও দেশের পাঁচটি শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিভিন্ন দাবির আন্দোলন, ছাত্র সংসদ নির্বাচন ও সংঘর্ষের জেরে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে একাডেমিক অবস্থা প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস উত্তপ্ত রয়েছে। আর স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অপরদিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বুয়েট) চারটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে রোববার পর্যন্ত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এই কর্মসূচি প্রত্যাহার করলেও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৩ মাসে দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ-প্রধান শিক্ষকসহ প্রায় সাড়ে তিন হাজার শিক্ষক নিজেদের শিক্ষার্থীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন। মব করে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে অন্তত আড়াই হাজার শিক্ষককে। এ ছাড়া ক্যাম্পাসে সংঘর্ষ, অবরোধ, আন্দোলন এবং শিক্ষকদের শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা ছিল প্রায় নিয়মিত। অস্থিরতার ছোঁয়া লেগেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও। ওই সময়ের মধ্যে দেশের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংঘটিত হয়েছে অন্তত ২৬টি সংঘর্ষ, নয়টি বড় আন্দোলন ও তিনটি হত্যাকাণ্ড। সরকারি-বেসরকারি স্কুল-কলেজ মিলিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অন্তত ১২০টি আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন। সর্বশেষ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার ঘটনায় পুরো ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও বিএনপির এক নেতার উপস্থিতিতেই এ হামলা হয়, কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের হামলার সময় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় প্রক্টরিয়াল বডিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগের আলটিমেটাম দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এরআগে রোববার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বহিরাগতরা শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় এবং ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। হামলার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। হামলার পর সেনাবাহিনী, বিজিবি, র?্যাব ও পুলিশ টহল দিলেও সোমবার সকালেই বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং সকাল ৯টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছাড়েননি, বরং বিক্ষোভ মিছিল করেন। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, আটকে থাকা শিক্ষক ও কর্মকর্তারা বেরিয়ে আসার সময় কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সাকলে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্যের বাসভবনের পাশে ব্রহ্মপুত্র নদের পাড়ে কিছু বহিরাগত সন্ধ্যার পর থেকে অবস্থান করছিলেন। ময়মনসিংহ মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শেখ আমজাদ আলী বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে জেলা প্রশাসক ও এসপির উপস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথার বলার সময় উপাচার্যের বাসভবনের পাশ থেকে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে একটি দল। আন্দোলনত শিক্ষার্থী মাহমুদ হাসান বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনা করছিলাম। হঠাৎ করে বহিরাগতরা অতর্কিত হামলা করে। কাদের নির্দেশে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে এসে হামলা করেছে, তাদের শনাক্ত ও হামলাকারীদের শনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনা হোক। শিক্ষার্থী ফাহাদ আহমেদ বলেন, শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে প্রশাসন বহিরাগত কিছু লোক ভাড়া করে হামলা চালায়, এটি খুব লজ্জাজনক। প্রশাসনকে এই ব্যর্থতার দায় নিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক শহীদুল হক বলেন, শিক্ষার্থীদের কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি মেনে নেওয়া হয়। এ ছাড়া চলমান দুটি পশু পালন ও ভেটেরিনারি ডিগ্রিও চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু তা মেনে নিতে পারেননি শিক্ষার্থীরা। ওই দুটি ডিগ্রি আমরা চাইলেই বাতিল করতে পারি না। এগুলো সরকার থেকে অনুমোদন করা। আমরা চেয়েছিলাম অল্প কিছু শিক্ষার্থী নিয়ে দুটি ডিগ্রি চালু থাকুক। শিক্ষার্থীরা তা চাচ্ছিলেন না, এ নিয়ে দ্বিমত সৃষ্টি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আবদুল আলীম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় বর্তমান পরিস্থিতি শান্ত রাখার জন্য যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা শিক্ষার্থীদের মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। তাতে বিশ্ববিদ্যালয় দ্রুত খুলে দেওয়া হবে। বহিরাগতদের হামলার বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাদের শনাক্ত ও এ বিষয়ে তদন্ত করা হবে।
চবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ১৪৪ জারি রাখাসহ ৪ দাবি শিবিরের: শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের হামলা এবং ক্যাম্পাসের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। সংবাদ সম্মেলনে তারা ১৪৪ ধারা জারি রাখাসহ প্রশাসনের কাছে চারটি দাবি জানিয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানায় শিবির। সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির সভাপতি মোহাম্মদ আলী। এ সময় তিনি শনিবার রাত এবং রোববার দিনব্যাপী চবি শিক্ষার্থীদের ওপর স্থানীয়দের বর্বরোচিত হামলা চলাকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, হাটহাজারী পুলিশ প্রশাসন এবং দেশের নিরাপত্তা বাহিনীর নীরব ভূমিকার তীব্র নিন্দা জানান। সংবাদ সম্মেলনে শিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ইব্রাহিম হোসেন রনি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সেক্রেটারি মোহাম্মদ পারভেজসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে ৩০ আগস্ট রাত ১১টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের এক নারী শিক্ষার্থী ২ নম্বর গেট এলাকার কাঁচাবাজার সংলগ্ন ভাড়া বাসায় প্রবেশ করতে গেলে রাত ১১টার পর বাসায় ঢুকতে পারবে না বলে বাধা দেওয়া হয়। এ সময় দারোয়ানের সঙ্গে ছাত্রীর বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ সময় দারোয়ান নারী শিক্ষার্থীর গায়ে আঘাত করেন। খবর পেয়ে কয়েকজন শিক্ষার্থী এগিয়ে এলে স্থানীয়রা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় মসজিদের মাইক ব্যবহার করে স্থানীয়রা আরও লোকজন জড়ো করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর চারদিক থেকে হামলা চালায়। এতে টানা চার ঘণ্টা ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করে। ওই ঘটনায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এর মধ্যে অন্তত ১৫ জনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাতের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই স্থানীয়রা আসিফ ভিলা নামক এক বাসায় অবস্থানরত কয়েকজন শিক্ষার্থীকে অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা তাদের উদ্ধারে গেলে স্থানীয়দের সঙ্গে আবারো সংঘর্ষ হয়। স্থানীয়রা দেশীয় অস্ত্র, ইট-পাটকেল নিয়ে আক্রমণ চালায়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও প্রক্টরসহ পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। সংঘর্ষ থামার পর সেখানে অভিযানে নামে যৌথবাহিনী। ৩১ আগস্ট কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনরত বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায় একদল বহিরাগত। রাত পৌনে আটটার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবি পূরণ না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ দুই শতাধিক শিক্ষককে শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে বেলা ১টা থেকে অবরুদ্ধ করে তালা ঝুলিয়ে আন্দোলন করছিলেন ওই শিক্ষার্থীরা। ওইদিন রাতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) সৈয়দ শাহনেওয়াজ মোর্শেদ অপু। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর লাঠি হাতে হামলা চালায় একদল ব্যক্তি। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে তারা শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনের তালা খুলে অবরুদ্ধ শিক্ষকদের বের করে দেয়। তবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থীদের ‘কম্বাইন্ড ডিগ্রি’র (বিএসসি ইন ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি) দাবিতে চলমান আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে রোববার বেলা ১১টায় একাডেমিক কাউন্সিলের সভা হয়। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে এ সভায় কম্বাইন্ড ডিগ্রি চালুর পাশাপাশি পশুপালন ও ভেটেরিনারি ডিগ্রিও চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তবে মোট তিনটি ডিগ্রি চালু রাখার সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ পশুপালন ও ভেটেরিনারি অনুষদের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সব অনুষদের দুই শতাধিক শিক্ষক অংশ নেন। সভা শেষে তিন ডিগ্রির সিদ্ধান্ত ঘোষণা দেওয়া হলে ‘এক পেশায় এক ডিগ্রির (কম্বাইন্ড ডিগ্রি)’ দাবিতে মিলনায়তনে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনকারীরা। এতে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়াসহ অন্য শিক্ষকেরা। পরবর্তী সময়ে রাত সাড়ে ৯টায় অনলাইনে জরুরি সিন্ডিকেট সভা হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অনির্দিষ্টকালের জন?্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শিক্ষার্থীদের সোমবার সকাল ৯টার মধ্যে হল ত?্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে গেছেন। গত রোববার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল বেশ কিছুদিন দিন ধরে পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে আসছে। অন্য দাবিগুলো নির্বাচন কমিশন মেনে নেওয়ার আশ্বাস দিলেও প্রথম বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকারের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। নবীন শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকারের দাবিতে এর আগেও তারা দুই দিন বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে। একই দাবিতে রোববার মনোনয়ন ফরম বিতরণের শেষ দিনে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা সকাল থেকে কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন। এদিন সকালে রাকসুর কোষাধ্যক্ষ কার্যালয়ের সামনে বারান্দায় রাখা একটি চেয়ার ভাঙচুর করেন তারা। এ সময় একটি বড় টেবিলও ফেলে দেওয়া হয়। পরে রাকসু ভবনের ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তারা। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ বন্ধ হয়ে যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে কেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি কিছুটা অস্থির হয়ে উঠেছে।
এ বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ড. মো. তৌহিদুল হক বলেন, ৫ আগস্টের পরিবর্তনের পর শিক্ষার্থীরা ভেবেছিল পরিবর্তন শিক্ষাখাত থেকেই শুরু হবে। কিন্তু তা হয়নি। রাজনৈতিক দলগুলোও শিক্ষার্থীদের ভূমিকা ভুলতে বসেছে। ফলে তাদের মধ্যে হতাশা গভীর হচ্ছে এবং যেকোনো বিষয়েই আন্দোলনে নামছে। একইভাবে মতামত তুলে ধরেছেন আরও কয়েকজন বিশ্লেষক।
নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

* উত্তপ্ত দেশের শীর্ষ ৫ বিশ্ববিদ্যালয়, আন্দোলনে স্থবির ক্যাম্পাস * চবি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ১৪৪ জারি রাখাসহ ৪ দাবি শিবিরের
হঠাৎ অস্থির শিক্ষাঙ্গন
- আপলোড সময় : ০১-০৯-২০২৫ ১০:৫০:২৯ অপরাহ্ন
- আপডেট সময় : ০১-০৯-২০২৫ ১০:৫০:২৯ অপরাহ্ন


কমেন্ট বক্স
সর্বশেষ সংবাদ